ব্রেকিং

x


রমজানে রোজার ফযিলত ও করণীয়

শনিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২০ | ৯:০৭ অপরাহ্ণ

রমজানে রোজার ফযিলত ও করণীয়

“সাওম” আরবী শব্দ, এর অর্থ- বিরত থাকা। “রোযা” ফার্সি শব্দ, এর অর্থ- উপবাস থাকা। সুবহি সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যাবতীয় পানাহার, স্ত্রী সহবাস হতে নিয়ত সহকাররে বিরত থাকাকে ইসলামের পরিভাষায় সাওম বা রোযা বলা হয়।
(আল মুখতাসারুল কুদরী ও তাফসিরে নাঈমী)

সাওম বা রোযা ইসলামের তৃতীয় রুকন। মহান আল্লাহ্ তায়ালার ঘোষণার মাধ্যমে হিযরতের দেড় বছর পর অর্থাৎ দ্বিতীয় হিজরীতে শাবান মাসের ১০ তারিখে উম্মতে মুহাম্মদী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামা)’র উপর পবিত্র রমযান মাসের রোযা ফরজ করা হয়। সকল সুস্থ, প্রাপ্ত বয়স্ক ও জ্ঞানবান মুসলিম নর-নারীর উপর রমযানের রোযা পালন করা ফরজ। মুসলিম সমাজের আত্নিক উৎকর্ষ সাধনের পাশাপাশি, পারস্পরিক সহনশীলতা, সামাজিক শুদ্ধতা অর্জনে এবং পার্থিব লোভ-লালসা, হিংসা- বিদ্বেষ পরিহার করে আত্মসংযম ও তাকওয়া হাসিলে রোযার মুসলিম নর-নারীর উপর রমযানের রোযা পালন করা ফরজ। মুসলিম সমাজের অাত্নিক উৎকর্ষ সাধনের পাশাপাশি, পারস্পরিক সহনশীলতা, সামাজিক শুদ্ধতা অর্জনে এবং পার্থিব লোভ-লালসা, হিংসা- বিদ্বেষ পরিহার করে অাত্মসংযম ও তাকওয়া হাসিলে রোযার মুসলিম নর-নারীর উপর রমযানের রোযা পালন করা ফরজ। মুসলিম সমাজের আত্নিক উৎকর্ষ সাধনের পাশাপাশি, পারস্পরিক সহনশীলতা, সামাজিক শুদ্ধতা অর্জনে এবং পার্থিব লোভ-লালসা, হিংসা- বিদ্বেষ পরিহার করে আত্মসংযম ও তাকওয়া হাসিলে রোযার মুসলিম নর-নারীর উপর রমযানের রোযা পালন করা ফরজ। মুসলিম সমাজের আত্নিক উৎকর্ষ সাধনের পাশাপাশি, পারস্পরিক সহনশীলতা, সামাজিক শুদ্ধতা অর্জনে এবং পার্থিব লোভ-লালসা, হিংসা- বিদ্বেষ পরিহার করে আত্মসংযম ও তাকওয়া হাসিলে রোযার মুসলিম নর-নারীর উপর রমযানের রোযা পালন করা ফরজ। মুসলিম সমাজের অাত্নিক উৎকর্ষ সাধনের পাশাপাশি, পারস্পরিক সহনশীলতা, সামাজিক শুদ্ধতা অর্জনে এবং পার্থিব লোভ-লালসা, হিংসা- বিদ্বেষ পরিহার করে অাত্মসংযম ও তাকওয়া হাসিলে রোযার বিশাল গুরুত্ব ও অবদান রয়েছে। হযরত আদম (আলাইহিস সালাম) থেকে এ সাওমের বিধ্ন ধারাবাহিকভাবে চলে আসছে।
(দূররে মুখতার, খাযাইনুল ইরফান ও খাযিন)

রমযানের রোযার ফযিলত
রোযার ফযিলত সম্পর্কে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا کُتِبَ عَلَیۡکُمُ الصِّیَامُ کَمَا کُتِبَ عَلَی الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَتَّقُوۡنَ

অর্থাৎ:
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে যেমন পূর্ববর্তীদের উপর ফরয হয়েছিল, যাতে তোমাদের পরহেয্‌গারী অর্জিত হয়। সূরা বাক্বারাহ্ ১৮৩
অফুরন্ত রহমত, বরকত ও ফযিলতে পরিপূর্ণ এই রমযান মাস। এ মাসের রোযা রাখার ফযিলত বর্ণনাতীত। মহান অাল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন,

فَمَنۡ شَہِدَ مِنۡکُمُ الشَّہۡرَ فَلۡیَصُمۡہُ ؕ

অর্থাৎ, তোমাদের মধ্যে যেই রমযান মাসে উপস্থিত থাকে, তথা রমযান মাস পায় তারই রোযা পালন করা অাবশ্যক। কারণ এতে অশেষ কল্যাণ ও সমৃদ্ধি নিহিত রয়েছে। সূরা বাক্বারাহ্ ১৮৫
হাদীস শরীফে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, হযরত সালমা ফারসী (রা:) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন শাবান মাসের শেষ দিনে সাহাবায়ে কিরাম গণের উদ্দেশ্য করে বলেন, হে লোকেরা তোমাদের উপর একটি মহান মোবাকর মাস ছায়া ফেলেছে। এ মাসে হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ একটি রাত অাছে। যে ব্যক্তি এ মাসে কেন ভাল কাজ দ্বারা অাল্লাহর সান্নিধ্য কামনা করে, সে যেন অন্যমাসের কোন ফরয কাজ করার ন্যায় আমল করল। অার এমাসে কোন ব্যক্তি যদি একটি ফরয কাজ অাদায় করে, সে যেন অন্য সময়ে ৭০টি ফরয আদায়ের নেকী লাভ করার সমান কাজ করল। এটি হলো সংযমের মাস অার সংযমের ফল হলো জান্নাত। এটি সাম্যের মাস, এমন মাস যাতে রিযিক বৃদ্ধি করে দেন। (বায়হাকী ও মিশকাত)
বর্ণিত হাদীসে নবীজি সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লাম অারো ইরশাদ করেন, এটি এমন মাস যার প্রথমাংশ রহমত বা দয়া, মধ্যম অংশ মাগফিরাত তথা ক্ষমা এবং শেষাংশ নাযাত বা দোযখ হতে মুক্তি দানের জন্য নির্ধারিত। এ মাস পাপ কাজ পরিহার করার এবং সৎকাজে নিজেকে নিয়োগ কারার মাস।।

হযরত অাবু হুরাইরা (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ইমান সহকারে রমযানের রোযা রাখে, তার অতীত জীবনের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।
অার যে ব্যক্তি ইমান সহকারে রমযানের ইবাদত করে তার অতীতের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। (বুখারী ও মুসলিম)

রমযানুল মোবারকে করণীয়ঃ

★ নুযূলুল কুরঅান তথা কুরআন মজীদ অবতীর্ণের মাস হিসেবে বেশি বেশি কুরঅান তিলাওয়াত করা। কারণ হাদীসে আছে, কুরআন ও রোযা কিয়ামত দিবসে রোযাদারের জন্য সুপারিশ করবে।
★ একটি ফরয অাদায় যেহেতু ৭০টি ফরযের সমান সাওয়াত, তাই যত ফরয ইবাদত রয়েছে তা সময়মত আদায় করা এবং একটি নফলে ফরযের সমান সাওয়াব তাই বেশি বেশি নফল ইবাদত করা।
★ প্রতিবেশী ও অাত্মীয় স্বজনদের খোঁজ খবর নেওয়া, যেহেতু হাদীসে আছে এটি সহমর্মিতার মাস।
★ রোযা অবস্থায় অশ্লীল কাজ ও অশ্লীল কথাবার্তা, বেহায়াপনা, মিথ্যা কথা, পরনিন্দা, গীবত, হাসদ, হিংসা-বিদ্বেষ,চুগলী, গালি-গালাজ, বেহুদা কথা-বার্তা, কারো অন্তরে কষ্ট দেওয়া, জুলুম করা, নাচ-গান দেখা ও শোনা, টেলিভিশনে অশ্লীল অনুষ্ঠান দেখা, ঝগড়া-বিবাদ, পরের হক ধ্বংস করার,কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ তথা রাপুসমূহ ইত্যাদি কুরআন সুন্নাহ বিরোধী কাজ থেকে নিজেকে পরহেজ বা বাচিয়ে রাখা। যেহেতু এ সমস্ত গর্হিত কাজ দ্বারা রোযার সাওয়াব অনেক কমে যায়।
★ ভোর রাতে সেহেরী খাওয়া। হাদীসে আছে, তোমরা সেহেরী খাও এতে বরকত রয়েছে।
★ ইফতারের সময় ইফতার সামনে নিয়ে দোআ করা। হাদীসে আছে, ইফতারের সময় দোআ কবুল হয়।
★ খেজুর দ্বারা ইফতার করা, সম্ভব না হলে হলে পানি দ্বারা ইফতার করা। ইফতার দেরি না করা। কেননা এটি ইহুদী নাসরাদের অভ্যাস এবং কোন রোযাদারকে ইফতার করানো। যে ইফতার করারে সে রোযাদারের সমান সাওয়াব পাবে। (তিরমিযী)
★ শবে ক্বদরের রাত্রিতে জেগে থেকে ইবাদত করা। হাদীসে আছে, যে ব্যক্তি ইমান সহকারে সাওয়াবের আশায় শবে ক্বদরে ইবাদত বন্দেগী করে, তার অতীত জীবনের সকল পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।
★ যাকাত প্রদান ও বেশি বেশি দান সদকাহ করা। যাতে গরীব- অসহায়গণ স্বাচ্ছন্দে রোযা রাখতে পারে।
★ রমযানের শেষ দশ দিন ই’তিকাফ করা। হাদীসে আছে, যে ব্যক্তি ই’তিকাফ করবে সে যেন দুইটি হজ্জ ও দুইটি উমরা সমপরিমাণ সাওয়াব লাভ করে। রাসুল (দ.) জীবনে কখনো ই’তিকাফ ত্যাগ করেননি।
★ ইদগাহে যাওয়ার আগে সদকায়ে ফিতর তথা ফিতরা অাদায় করা।

উপরিউক্ত কুরআন হাদীসের আলোকে বলা যায় পবিত্র রমযান মাসের রোযার ফযিলত অত্যাধিক, যা ধারণা বা অনুমানযোগ্যও নয়। আল্লাহ পাক আমাদেরকে এ মহান ফযিলতপূর্ণ মাসের বারাকাত ও ফয়ুজাত দানে ধন্য করুন। আমীন ছুম্মা আমীন।

(লেখক-সৈয়দ মুহাম্মদ আবু ছাদেক, শিক্ষার্থী, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম)
sayedabusadeq@gmail.com

Facebook Comments Box

বাংলাদেশ সময়: ৯:০৭ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২০

ekhonbd24.com |

Development by: webnewsdesign.com