আব্দুল কালাম। বয়স ৬০ বছর ছুঁই ছুঁই। সামান্য ড্রাইভারের চাকরি করে কোন রকম জীবিকা নির্বাহ করেন। ২০১৭ সালে সহকর্মি বন্ধু বান্ধবদের সাথে নিয়ে সেবা ও কল্যাণের মানষিকতা নিয়েই অতিথি কর্মজীবি সমবায় সমিতি নামের একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। নিবন্ধন নেন সমবায় দপ্তর থেকে। মাত্র ১০০ টাকা চাঁদায় ২৬৩ জন সদস্য নিয়ে ২০১৮ সালে কার্যক্রম শুরু করা এই সমিতিই এখন কাল হয়ে দেখা দিয়েছে আব্দুল কালামের জীবনে।
মাত্র দুই বছরেরও কম সময় পরিচালিত এই সমিতির চাঁদা জমা হয়েছিলো ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। সভাপতির সাথে বিরোধ তৈরি হলে সেই টাকা সদস্যদের যথানিয়মে ফিরিয়েও দেন তিনি। কিন্তু কুচক্রি মহলের ব্যক্তিগত আক্রাশ আর হয়রানীর মানষিকতায় আব্দুল কালাম এখন ২১ লাখ টাকার মামলার ফাঁদে আটকা পড়েছেন। মামলা হয়রানী, মানষিক যন্ত্রনায় আবদুল মালেক গত বছর হারিয়েছেন স্ত্রীকে। নিজে স্ট্রোক করে হয়েছেন গুরুতর অসুস্থ। এখন তিনি ন্যয় বিচার পেতে ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে।
আব্দুল মালেক জানান, সেবা ও কল্যানের কথা চিন্তা করেই অতিথি কর্মজীবি সমবায় সমিতি নামের একটি সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সংগঠনের সভাপতি ছিলেন অলি উদ্দিন হাওলাদার এবং আব্দুল মালেক নিজে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালে সভাপতির সাথে নানা কারনে বিরোধ সৃষ্টি হলে সমিতির কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়ে সদস্যদের সব টাকা ফিরিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু কার্যক্রম বন্ধ করার এক বছর পর ২১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আদালতে মামলা দায়ের করেন সভাপতি অলি উদ্দিন হাওলাদার। আব্দুল মালেক কান্না জড়িত কণ্ঠে এই প্রতিবেদককে বলেন সমবায় দপ্তরের অডিট এবং মাসিক চাঁদার ভিত্তিতে সমিতির কার্যকালে মাত্র ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা লেনদেন হয়েছে। কার্যক্রম বন্ধ করার সময় সদস্যদের সব দেনা-পাওনা শোধ করে দেওয়া হয়। বর্তমানে সমিতির কোন সদস্যই কোন পাওনা দাবী করেন নি। এমনকি সমিতির কোন সদস্যদেরও কোন অভিযোগ নেই। এর পরও ষড়যন্ত্রমুলক ভাবে ২১ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলা দায়ের হয়েছে। এখন মামলার ফাঁদে আদালত, আইনজীবি, পুলিশের কাছে ধর্ণা দিতে দিতে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন আব্দুল মালেক।
এ প্রসঙ্গে আব্দুল মালেকের আইনজীবি অ্যাডভোকেট খোরশেদুল আলম টিপু জানান, আব্দুল মালেকের বিরুদ্ধে যে অর্থ আত্মসাতের মামলাটি দায়ের করা হয়েছে তা মিথ্যা এবং নিতান্তই হয়রানীমুলক. ভিত্তিহীন। আব্দুল মালেকের কাছে কারো কোন টাকা পাওনা নাই, কেউ টাকা পাবেন এমন কোন পাওনাদারও খূঁজে পাওয়া যায়নি। সংগঠনের কোন সদস্য টাকা পাবে এমন কোন অভিযোগও কেউ করেনি। এর পরও আবদুল মালেকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের হয়রানীমুলক মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। যে মামলার হয়রানীতে আবদুল মালেক স্ট্রোক করে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। স্বামীর সাংগঠনিক ঝামেলায় তার স্ত্রীও গত বছর মৃত্যুবরণ করেছেন। এমন মিথ্যা হয়রানীমুলক মামলায় আব্দুল মালেক আদালতে ন্যায় বিচার পাবেন বলে এই আইনজীবি আশা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ৭:২৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২
ekhonbd24.com | sarwar ctg
Development by: webnewsdesign.com