ব্রেকিং

x


মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে শিল্পীদের জন্য মানবিক আবেদন..

বুধবার, ২২ এপ্রিল ২০২০ | ১১:০৪ অপরাহ্ণ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে শিল্পীদের জন্য মানবিক আবেদন..

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনিতো ষোল কোটি মানুষের অভিভাবক। মানবিক দৃষ্টিস্বম্পন্ন একজন মানুষ। দুই চক্ষু ছাড়াও আপনার ভেতরের অর্ন্তদৃষ্টি, দুরদর্শিতা ও মানবিক মনের কারণে দেশের সমস্ত খবর আপনার কাছে আছে। আপনার সমস্ত গঠন মুলক সিদ্ধান্তের কারনে করোনা (কভিড ১৯) মোকাবেলা করছে মানুষ।

আমাদের মনে হচ্ছে শিল্পীদের খবর আপনার কাছে পৌছানোর ক্ষেত্রে কোথায় যেন একটা বাধা হয়ে আছে। শিল্পীরাই মুক্তিযুদ্ধের সময় গান গেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্ভুদ্ধ করেছে। স্বাধীনতা যুদ্ধ সহ প্রতিটি গনতান্ত্রিক আন্দোলনে সাংকৃতিক কর্মীদের অবদান অন্সীকার্য। এই শিল্পীরাইতো নাটক, কবিতা আবৃত্তি, ভাটিয়ালি, বিচ্ছেদ, লালন, বাউল, মাইজভান্ডারি, আঞ্চলিক,যন্ত্রশিল্পী, চারুশিল্পী, যাত্রাপালা, কবিগান, পালাগান ইত্যাদি পরিবেশনের করে এই সোনার বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি চর্চা ও বিকাশের মাধ্যমে বাংলাকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরছে। এই শিল্পীদের খবর আজ কেউ রাখছেনা। করোনার কারনে লকডাউন হওয়ার ফলে ঘরের মধ্যে সকল শিল্পীরা পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে দিন অতিবাহিত করছে।

সন্তানদের ক্ষুধার কারনে তাদের মুখের দিকে লজ্জায় তাকাতে পারছেনা। শিল্পীরা আজ সুর ভুলে যাচ্ছে। নিজের মানসম্মান, লজ্জা, বিবেকের তাড়নায় হাত পেতে কারো কাছে কোন সাহায্য কখনো নিতে শিখে নাই বিধায় আজ শিল্পীরা লাইনে দাড়াতে পাড়ছে না,কারো কাছে গিয়ে চাল – ডাল, আলু – পেঁয়াজ চাইতে পারছে না। আবার কোন নেতা, জনপ্রতিনিধি, সাংসদ, মন্ত্রী এসে কোন শিল্পীকে জিজ্ঞেস করছে না যে শিল্পী সমাজের কোন সমস্য আছে কিনা? আমাদের সকল জাতীয় মোর্চাগুলো ঢাকাতে। জাতীয় নেতারাও ঢাকাতেই অবস্থান করেন। তারাও কোন খবর নিচ্ছেন না দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এই শিল্পীদের। যখন প্রয়োজন হবে তখন নেতারা ডাকবেন শিল্পীদের নানা ধরনের অনুষ্ঠান করার জন্য। আবার কেউ কেউ শিল্পীদের মাথা বিক্রি করবেন। আমাদের সাংস্কৃতিক মন্ত্রীও শিল্পীদের জন্য অদ্যাবধি কোন সহযোগিতার ব্যবস্থা করতে পারেন নাই। প্রনোদনার কোন ব্যবস্থা করেন নাই। কারন করলে আমরা জানতে পারতাম। কিন্তুু বিত্তবানদের জন্য প্রনোদনার ব্যবস্থা হয়ে গেছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সকল সিদ্ধান্ত তো আপনার কাছ থেকে আসে তাই আমরা অসহায় ও অভিভাবকহীন শিল্পী সমাজ আজ সমস্ত লজ্জা, মান সম্মান কে বিসর্জন দিয়ে আপনার কাছে দুই হাত তুলে ধরলাম। আমাদের বাঁচিয়ে রাখেন। আমাদের সন্তানদের মুখে খাবারের ব্যবস্থা করুন। পরিবারের কাছে আর যাতে লজ্জা পেতে না হয়। আমাদের গলার সুরকে বাঁচিয়ে রাখুন। গত মার্চে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীর শুরুতে কোন অনুষ্ঠান করতে পারি নাই, পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান করতে পারি নাই। বেতার টেলিভিশনে কোন অনুষ্ঠান ধারন হচ্ছে না। দেশের সকল মঞ্চগুলো অন্ধকার হয়ে আছে, সেখানে আজ আলো জ্বলে না।

গ্রামে – গঞ্জে বৈশাখের কোন মেলা পার্বণ হচ্ছে না বিধায় আমাদের কোন অনুষ্ঠান নাই। তাই বলছিলাম আমাদের শিল্পীদের বাঁচিয়ে রাখুন এবং মা যেমন তার সন্তানকে বাঁচিয়ে রাখে তেমনি আপনিই পারেন আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে। খেতেদিন না হয় কিছু টাকা ঋণ দিন। আমরা গান গেয়ে, নাটক করে, কবিতা পড়ে, নৃত্য পরিবেশন করে ঋণের টাকা শোধ করে দিবো। আমরা শিল্পীরা ঋন নিয়ে পালিয়ে যাবোনা। আমাদের যাবার কোন দেশ বা জায়গা নেই। আমাদের ঠিকানা একটাই সেটা হলো মঞ্চ। সুতরাং আমাদের খুঁজে পাবেন। মাগো শিল্পীদের চোখের আর মুখের দিকে একবার তাকান দেখেন আমরা ভালো নাই।

আমরাও সবার মতো ভালো থাকতে চাই।

সাইফুল আলম বাবু, সাধারন সম্পাদক-জেলা শিল্পকলা একাডেমি চট্টগ্রাম
ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ গ্রুপ  থিয়েটার ফেডারেশান।
( সাইফুল আলম বাবুর ফেসবুক ওয়াল থেকে নেয়া)

Facebook Comments Box

বাংলাদেশ সময়: ১১:০৪ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২২ এপ্রিল ২০২০

ekhonbd24.com |

Development by: webnewsdesign.com