ব্রেকিং

x


বাংলাদেশ রেলে ‘পাকিস্তানি কম্পার্টমেন্ট’!

সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | ৭:৩৭ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশ রেলে ‘পাকিস্তানি কম্পার্টমেন্ট’!

ঘটনাটি আজ সোমবার সকাল ৯টার। ৬১ নম্বর আপ লালমনিরহাট-বিরল কমিউটার ট্রেন পার্বতীপুর রেলস্টেশনে প্রবেশ করেছে তখন। যাত্রীবাহী এ ট্রেনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এসেছে ‘পূর্ব পাকিস্তান রেলওয়ে’র ৫টি বগি। বগিগুলোর নম্বর ২০৬৫, ২০২১, ২১৬৬, ২১৬৩ ও ২৮১১। এর মধ্যে ২০৬৫ ও ২০৭১ নম্বর বগি দুটি দ্বিতীয় শ্রেণির। রোমান হরফে লেখা। অন্যগুলো তৃতীয় শ্রেণির যাত্রীদের জন্য। সঙ্গে আছে গার্ডভ্যান।

পাকিস্তানি বগিগুলো দেখতে মুহূর্তে ভিড় জমে যায়। কেউ কেউ বলেন, শালাদের সাহসের তারিফ না করে পারা যায় না। দেশ স্বাধীন হয়েছে ৫০ বছর,  এখনও পাকিস্তানপ্রিয় মানুষ আছে এ দেশে! কিছুক্ষণের মধ্যে রেলের ক্যারেজ বিভাগের লোকজন এসে হাজির হন। বগিগুলো কেটে নিয়ে যান রেলের ডকইয়ার্ডে।

ক্যারেজ বিভাগের কর্মরত একাধিক স্টাফের সাথে কথা বলে জানা গেল, বগিগুলো আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে কাঞ্চন এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে  যুক্ত করে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেশন (পঞ্চগড়) নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে মুক্তিযুদ্ধের ওপর শুটিং হবে। সেই শুটিংয়ে এ ট্রেন, বগিগুলো ব্যবহার করা হবে।

এদিকে ৬১ নম্বর কমিউটার ট্রেনের একজন যাত্রী বলেন, এ ট্রেনের ৫টি বগির রং দেখতে পাচ্ছি সবুজ।

কিন্তু পাকিস্তান আমলে ও মুক্তিযুদ্ধের সময় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান রেলের প্রতিটি ট্রেনের বগির রং ছিল হালকা লাল। যুদ্ধের সময় মিটার গেজ রেলপথে যে ট্রেন চলেছিল, তার প্রতিটি বগির সাইজ ছিল ছোট। অধিকাংশই ছিল কাঠের বগি।

তবে দু-একটা স্টিল বডিও ছিল। দ্বিতীয় শ্রেণির বগিতে ১০ থেকে ১২ জনের বসার সিট ছিল। তৃতীয় শ্রেণির বগি ছিল লম্বা, আসন সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ ৩২ জন। নিচে ১৬ থেকে ২২ জন বসতে পারত। ট্রেনের ভেতরের সিটগুলো ছিল কাঠের বাতা দিয়ে তৈরি করা। কিছু কিছু সিট স্টিলের ছিল।

তবে এই ট্রেনে যে সোফার সিট ব্যবহার করা হয়েছে এমন একটিরও ছিল না। আর একটি বিষয় হলো- এই ট্রেনের প্রতিটি বগির জানালায় শিক দেওয়া আছে। প্রকৃতপক্ষে এমনটি ছিল না।

প্রতিটি ট্রেনে একটি অথবা দুটি করে মহিলা কম্পার্টমেন্ট ছিল। এসব কম্পার্টমেন্টে মহিলাদের আঁকা ছবি থাকত। নিরাপত্তার জন্য মহিলা কম্পার্টমেন্টের জানালায় শিক লাগানো থাকত। যাতে কোনো দুর্বৃত্ত চলন্ত ট্রেনের ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে। পুরুষ যাত্রীদের কম্পার্টমেন্টের জানালায় শিক বা রড ব্যবহার করা হতো না।

মুক্তিযুদ্ধের আবহ তৈরি করতে এ বগিগুলো মোটেই সক্ষম হবে না বলে রেলের একজন অবসরপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার মো. আনোয়ার হোসেন মনে করেন।

Facebook Comments Box

বাংলাদেশ সময়: ৭:৩৭ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১

ekhonbd24.com |

Development by: webnewsdesign.com