ঢাকা : ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় জুটি চিত্রনায়ক অনন্ত জলিল ও চিত্রনায়িকা বর্ষা। ব্যক্তিগত জীবনে তারা স্বামী স্ত্রী। ২০১০ সালে খোঁজ দ্য সার্চ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে এই দুজন অভিনয় করেন। ব্যয়বহুল ঐ সিনেমাটির অনন্ত জলিল নিজের টাকাতেই বানান। ওই ছবি মুক্তির পরেই অনন্ত ও বর্ষা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর থেকে এই দুজনকে অন্য নায়ক বা নায়িকার বিপরীতে দেখা যায়নি।
রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে হোটেল লা মেরিডিয়ানে চিত্রনায়ক অনন্ত জলিলের নতুন সিনেমা নেত্রী- দ্যা লিডার সিনেমা নিয়ে কথা বলার জন্য একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সেখানে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে অনন্ত জলিল বলেন, ‘…আমি বর্ষা ছাড়া আর কারো বিপরীতে অভিনয় করবো না। আর আমার বিপরীতেও অন্য কোনো নায়িকা আসবে না…’
সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন- সিনেমার নামটিতে নারী প্রধান চরিত্র নিশ্চই থাকবে, এবার কি নারীপ্রধান চরিত্রে বর্ষা আসছেন ?
এর জবাবেই অনন্ত জানান তিনি অন্য নায়িকার বিপরীতে অভিনয় করবেন না আর বর্ষাও অন্য নায়কের বিপরীতে অভিনয় করবেন না। আর এই প্রসঙ্গটি সামনে চলে আসছে গতকাল থেকে। কেন তারা অন্য নায়ক নায়িকার বিপরীতে কাজ করবেন না। এর উত্তর খুঁজে পেতে চাইলে একটু পেছনে চলে যেতে হবে। একটু না, বলা যায় ৮ বছর পেছনে।
যদিও ২০১৩ সালে অনন্ত ও বর্ষার সম্পর্কে চিড় ধরে। বর্ষা বাড়ি থেকে বের হয়ে চলে যান। তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ বিষয়ে অনন্ত জলিল মোহাম্মদপুর থানায় জিডি করেছিলেন। এরপর বর্ষাও মারধরের অভিযোগ এনে জিডি করেন অনন্ত জলিলের বিরুদ্ধে। তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছিল অনন্ত জলিল বর্ষার ‘চরিত্র’ নিয়ে কথা বলেছিলেন বলে সেসময়ে গণমাধ্যমগুলো লিখেছিল।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল বলেছিলেন, অনন্ত জলিল শুক্রবার দুপুরে থানায় এসে সাধারণ ডায়েরি করার পর রাতে তার স্ত্রী বর্ষা আসেন। এরপর তিনি তার স্বামী জলিলের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং ১৬০০) করেন। আমরা তদন্ত করছি। কেন উভয়ে উভয়ের নামে এ ধরনের অভিযোগ করেছেন তা নিয়ে এখনো তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ওই সময় বর্ষা ভারতের সিনেমার কাজে জেট এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে কলকাতায় চলে যান। ২০১৩ সালের ২২ মার্চ জিডি করেছিলেন ২৫ মার্চ কলকাতা উড়াল দেন বর্ষা। বর্ষার অন্য সিনেমায় কাজ করতে যাওয়ার ব্যাপারটিকে অনন্ত বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেননি সে সময় ডিভোর্সের পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। কাগজপত্রেও বিষয়টি এগিয়েছিল। বর্ষার বিরুদ্ধে অনন্ত জলিলের অভিযোগ, অনন্ত জলিলের বর্ষার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল গুরুতর। বর্ষা অনন্ত জলিল ছাড়াও আলাদা সিনেমা করতে চাইতেন, অনন্ত জলিল সেটা দিতেন না। বর্ষা কলকাতাতেও গিয়েছিলেন সিনেমার কাজেই।
ডিভোর্স, সাক্ষর- এসব থেকে ফিরে অনন্ত জলিল ও বর্ষা এক হয়েছিলেন। একসঙ্গে সংসার রচনা করেছেন। সে সংসার এখনো অটুট রয়েছে। বর্ষা সংসার ছাড়াও ব্যস্ত থাকেন নিজের নামের গার্মেন্টসের দায়িত্ব পালনে। হেমায়েতপুরে অনন্ত জলিলের এজেআই গ্রুপের পাশেই এবি গ্রুপের অফিস। সেখানেই বর্ষা বসেন। এর ফাঁকেই সংসার ও বাচ্চাদের লালন পালন, আর সময় করে সিনেমার কাজ। ২০১৩ সালের মিচুয়াল অনন্ত বর্ষাকে এক করেছে। যার কারণে এখন দুজন দুজনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে গেছেন।
তাদের মধ্যে কথা হয়, তারা নিজেরাই নিজেদের সিনেমায় নায়ক নায়িকা হিসেবে অভিনয় করবেন। বর্ষা সবসময়ই অনন্তের নায়িকা হবেন, আর অনন্তই বাস্তব ও সিনেমা পর্দায় বর্ষার একমাত্র নায়ক হবেন। যার ফলে এই দুজনের মাঝে আর কোনো জুটি হবার সুযোগ নেই।
আর তাই তো নেত্রী-দ্য লিডার সিনেমার মিট দ্য প্রেসে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘যেহেতু বর্ষা ছাড়া আর কারো বিপরীতে অভিনয় করবো না। আর আমার বিপরীতেও অন্য কোনো নায়িকা আসবে না…’
২০১১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর অনন্ত ও বর্ষার বিয়ে হয়। অনন্ত-বর্ষার প্রথম ছবি ‘খোঁজ—দ্য সার্চ’ ব্যাপক আলোচিত হয়। এরপর তারা ‘হৃদয় ভাঙা ঢেউ’, ‘মোস্ট ওয়েলকাম’ ও ‘নিঃস্বার্থ ভালোবাসা’ ছবিতে জুটি হয়ে অভিনয় করেন।
বাংলাদেশ সময়: ৭:০৬ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১
ekhonbd24.com | the reporter
Development by: webnewsdesign.com